প্রেস সচিবের ফেসবুক পোস্টে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩:৫৭ অপরাহ্ন, ১১ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৭:২৯ অপরাহ্ন, ১১ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমতার দাবি, হাসিনার হাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আছে, যা দিয়ে তিনি বিশ্বজুড়ে নিজ পক্ষে প্রচারণা চালাতে এবং দামি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারছেন মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘নিজের জনগণের ওপর হত্যাযজ্ঞের পর ইদি আমিন ১৯৭৯ সালে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ২০০৩ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই নীরবে বসবাস করেন। নির্বাসনে থাকাকালীন তিনি কোনো সাক্ষাৎকার দেননি এবং খুব কম সময়ই নিজের বাসভবন থেকে বের হতেন। এর কারণ, তিনি ছিলেন নিঃস্ব এক সাবেক স্বৈরশাসক। নির্বাসিত, ক্ষমতাহীন ও টাকা-পয়সা না থাকা একজন গণহত্যাকারীর সাক্ষাৎকার নিতে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমেরও কোনো আগ্রহ ছিল না।’

আরও পড়ুন: রিপন মিয়াকে ঘিরে তুমুল বিতর্ক: ভাইরাল সংবাদের আড়ালে কোথায় সত্য?

তিনি লেখেন, ‘শেখ হাসিনার হাতেও রক্ত লেগে আছে। তিনি হাজারো মানুষকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন, প্রায় ৪ হাজার মানুষকে গুম করেছেন এবং তার ঘনিষ্ঠদের সহায়তায় ব্যাংক লুটপাটে তদারকি করেছেনইদি আমিনের মতো তিনিও শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তবে তার ক্ষেত্রে গন্তব্য ছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু আমিনের মতো হাসিনা নির্বাসনে থেকে নীরবতা পালন করছেন না।’

আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলকে সমর্থন জানিয়ে ওসির ফেসবুক পোস্ট, বিতর্কের ঝড়

শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘পার্থক্যটা কীসের? টাকার। হাসিনার কাছে টাকার কোনো অভাব নাই যা দিয়ে তিনি বৈশ্বিক প্রচারণা চালাতে এবং অভিজাত আইনজীবী দলগুলোকে অর্থায়ন করতে পারছেন। তার সহযোগীরা বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ল’ ফার্মগুলোর একটি ভাড়া করেছে, আর তার পিআর এজেন্সিগুলো একের পর এক সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করেছে, যা সুবিধামতো ইমেইলের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘পশ্চিমা সাংবাদিকরা এবং তাদের ভারতীয় চাটুকার সহযোগীরাও নিশ্চিত নন যে সেই উত্তরগুলো সত্যিই হাসিনার কাছ থেকে আসছে, নাকি তাঁর জনসংযোগ কর্মকর্তাদের লিখে দেওয়া! তবুও তারা এই তথাকথিত “ইমেইল সাক্ষাৎকারপ্রকাশ করে চলেছে, হাসিনার নিজের বর্ণনাকে টিকিয়ে রাখতে ব্যয় করা কোটি টাকার সৌজন্যে।’

স্ট্যাটাসে তিনি আরও লেখেন, ‘এটা কোনো নতুন কৌশল না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক প্রধান ডোমিনিক স্ট্রস-কান নিউইয়র্কের একটি হোটেলে এক নারীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করার পরও কারাবরণ করেননিকারণ তিনি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ল’ ফার্মে বিপুল অর্থ ঢেলেছিলেনগণহত্যাকারীদুর্নীতিগ্রস্ত অভিজাতদের জন্য পিআর এজেন্সিআইনজীবীরা একটা ইলুশন তৈরি করে দেন, যাতে তাকেনির্দোষদেখানো যায়।’

চিলির স্বৈরশাসক পিনোশের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘পিনোশেও ইউরোপে পালিয়ে গিয়ে একই ধরনের সুবিধা নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও ন্যায়বিচার থেকে রেহাই পাননি।’

স্ট্যাটাসের শেষাংশে শফিকুল আলম লেখেন, ‘আগামী কয়েক সপ্তাহে হাসিনার আরও কিছু “ইমেইল সাক্ষাৎকার” প্রকাশিত হবে, যা প্রবল উৎসাহে ছড়িয়ে দেবে পশ্চিমা গণমাধ্যম ও ভারতীয় সহযোগীরা। এর কোনোটাই গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নাই। এসবে যা লেখা থাকবে তার সবটাই মিথ্যা, কোনো অনুশোচনাও থাকবে না। এগুলো কোটি ডলারের পিআর এজেন্সির ফসল, যার উদ্দেশ্য হলো এক গণহত্যাকারীকে মানবিক রূপে উপস্থাপন করা।’